পতিত জমিতে কুল চাষে সাফল্য
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
০৩-০১-২০২৫ ০৪:৫১:৩৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০৩-০১-২০২৫ ০৪:৫১:৩৪ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের আফরা গ্রামের কুল চাষি কিরামত আলী মোল্যা। বাড়ির পাশের পতিত জমিতে ৩ বছর আগে শুরু করেন কাশ্মীরি কুল চাষ। বর্তমানে ৬০০টি কুল কাছ রয়েছে তার বাগানে। প্রতিটি গাছে কুল ধরেছে ২০ থেকে ৩০ কেজি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ১৪৮ হেক্টর জমিতে কুল চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে নড়াইল সদর উপজেলায় ৮৩ হেক্টর, লোহাগড়া উপজেলায় ৪০ এবং কালিয়া উপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে। যার লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে ৭১৫ মেট্রিক টন। এতে সদর উপজেলায় ৩৯০, লোহাগড়া উপজেলায় ১৯৮ ও কালিয়া উপজেলার ১২৭ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
কিরামত আলী জানান, ২০২২ সালে ২ বিঘা পতিত জমিতে ১ম বার চাষ শুরু করেন তিনি। ওই বছর ৩০ হাজার টাকা খরচ করে দেড় লাখ আয় হয় তার। ৩ বছর পর নিজের পরিবার ও আত্মীয়দের চাহিদা পূরণ করে এ বছর বিক্রি হবে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার কুল। বাগানের কুলের স্বাদ হালকা মিষ্টি। প্রতিটি আপলে কুল বেশ বড়। তার দেওয়া নার্সারিতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন অনন্ত ৮ জন মানুষের।
তিনি বলেন, আমার বাগানে জৈব সার ও প্রাকৃতিকভাবে এখানে কুল চাষ হয়। কুল খেতে খুব মিষ্টি। এখান থেকে নসিমনে করে নড়াইল, যশোর, বসুন্দিয়া, লোহাগড়া বাজারে পাইকারি দরে বিক্রি করি। কোনো ব্যাংক যদি সুদ ছাড়া লোন দেয় তাহলে বড় পরিসরে কুল চাষের পাশাপাশি অন্য ফলের চাষ করে কমপক্ষে ১০০ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারব।
বাগান পরিচর্যার ব্যস্ত শ্রমিক সেলিম শেখ বলেন, আমরা এখানে ৮ জন কাজ করি। কুল ছিড়ি। গাছগুলোর ডাল ছাঁটাই করি। নিচে পড়া কুল একত্রিত করি এবং এগুলো বাজারজাত করার ব্যবস্থা করি। বেতন ঠিকঠাক দেয়। ভালোই আছি।
কিরামত আলীর স্ত্রী সেলিনা বেগম বলেন, বাগানে আমরা স্বামী স্ত্রী দু’জন সব সময় পরিচর্যা করি। বাড়িতে কাজ করতে পারছি। অন্যের কাজ লাগছে না। যে কুল হয় আত্মীয়দের মাঝে দেওয়া হয়। বিক্রি করে ভালো লাভ হচ্ছে। সব মিলে ভালোই আছি।
বাগানে কুল কিনতে আসা রাতুল মোল্যা বলেন, কুল বেশ সুস্বাদু। হালকা মিষ্টি টক টক। গ্রামের মানুষ দাম কম নেয়। তাই এই বাগিচায় কুল কিনতে এসেছি। এখানে কোনো প্রকার রাসায়নিক সার দেওয়া হয় না। জেনে শুনে বিষ মুক্ত কুল কিনছি।
দেবভোগ থেকে আসা সৌরভ বলেন, এদিকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে এসেছি। বাগান দেখে ভালো লাগছে। বাড়ি যাওয়ার সময় ২ কেজি কিনি নিয়ে যাচ্ছি। এখানের কুল খেতে খুব মিষ্টি।
নড়াইল সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, বাউকুল আপেল কুল কাশ্মীরি কুল, নারিকেল কুল, বল সুন্দরী প্রজাতির কুল এবার জেলায় চাষ হচ্ছে। শেখহাটি ইউনিয়নের আফরা গ্রামের কিরামত আলী তার পতিত জমিতে কুল চাষ করেছেন। আমরা কৃষি অফিস থেকে সার্বিক সহযোগিতা করছি। তার এই উদ্যোগ দেখে ওই গ্রামের অনেকে কুল চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স